রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ১৩ আগস্ট ২০২৪

আজ ‘বাঁ-হাতি দিবস’

আজ ‘বাঁ-হাতি দিবস’
সংগৃহীত ছবি

বাম হাতে কাজ করার বিষয়টিকে অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেন না। তাই বিশ্বজুড়ে ‘বাঁ-হাতি দিবস’ পালন করা হয় এসব মানুষকে বোঝানোর জন্য যে, এটা কোনো অস্বাভাবিকতা নয়।

আজ ১৩ আগস্ট, বিশ্ব বাঁ-হাতি দিবস। কর্মক্ষেত্রে বাঁ হাতিদের অসুবিধা দূরীকরণে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে ১৩ আগস্টকে ‘লেফট হ্যান্ডারস ইন্টারন্যাশনাল ডে বা আন্তর্জাতিক বাঁ-হাতি দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

দেখা যায়, পৃথিবীতে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষই ডানহাতি। আর মাত্র ১০ ভাগ লোক বাঁ-হাতি। ডানহাতি মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাঁ-হাতি এই ১০ ভাগের মূল্যায়ন দেখা যায় না, এমনকি কোনো পণ্য প্রস্তুতের ক্ষেত্রে তাদের কথা ভাবাও হয় না। যার বড় প্রমাণ কম্পিউটারের মাউস থেকে শুরু করে আলমারির হাতল পর্যন্ত। এসব জিনিস ডান হাতি ব্যবহারকারীদের উপযোগী করে তৈরি। এ কারণে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাঁ-হাতি মানুষদের নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়।

কোনো ছোট বাচ্চাকে যখন দেখা যায় বাঁ-হাতে কাজ করতে, তখন অনেক সময় সমাজে তাদের কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আসলে বিষয়টিকে অনেকেই স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারেন না। অনেক বাবা-মা বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবে নিলেও অনেকেই কিন্তু বাঁ হাতে লেখা, খাওয়া ঠিক মেনে নিতে পারেন না।

আসলে বিশ্বজুড়ে বাঁ-হাতি দিবস পালন করা হয় সম্ভবত এই সব মানুষকে বোঝানোর জন্য যে, এটা কোনো অস্বাভাবিকতা নয়। ডান-হাতিরা যেমন মস্তিষ্কের বাঁ দিকের অংশটি বেশি ব্যবহার করেন, তেমনই বাঁ-হাতিরা মস্তিষ্কের ডান দিকের অংশ বেশি ব্যবহার করেন।

১৯৭৬ সালে প্রথম পালিত হয় আন্তর্জাতিক বাঁ-হাতি দিবস। শুরুটা করেন, ডিন আর ক্যাম্পবেল নামে এক ব্যক্তি, যিনি ‘লেফ্টহ্যান্ডার্স ইন্টারন্যাশনাল’ নামে এক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর ১৩ আগস্ট পালিত হয় এই দিনটি। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হয়, বাঁ-হাতি হলে যেমন কিছু অসুবিধা আছে, তেমন কিছু সুবিধাও আছে। বিশ্বে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় দশ শতাংশ মানুষ বাঁ-হাতি। আর বিশ্বের বিখ্যাত মানুষের তালিকায় বাঁ-হাতিদের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়।

একবার বাঁ-হাতি বিখ্যাত মানুষদের তালিকায় চোখ বোলালেই বুঝতে পারবেন, তারা ডান-হাতিদের থেকে কোনো অংশে কম নয়, শুধু ডান হাতের বদলে বাঁ হাত ব্যবহারে স্বচ্ছন্দ। অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, অ্যারিস্টটল, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, মেরি কুরি, বারাক ওবামা, বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ, অমিতাভ বচ্চন, সচিন তেন্ডুলকর, ব্রায়ান লারা, ওয়াসিম আক্রাম, রাফায়েল নাদাল, ডেভিড গাওয়ার, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, টম ক্রুজ, হেলেন কেলার, লেডি গাগা, লুইস ক্যারল, প্রিন্স উইলিয়ামস, ওপরাহ উইনফ্রে, তাদের পরিচয় নতুন করে দেওয়ার কিছু নেই, তারা সবাই বাঁ-হাতি।

এই তালিকা নেহাতই ছোট নয়, আরো প্রচুর বাঁ-হাতি বিখ্যাত মানুষের নাম তালিকায় রয়েছে। ফলে বাঁ-হাতিরা ডান-হাতিদের থেকে কম তো নয়, বরং এগিয়েই বলা যায়। এটা বলা হয়, বাঁ-হাতিরা ডানহাতিদের থেকে বেশি সৃষ্টিশীল এবং বুদ্ধিমান হন। উপরের তালিকা দেখলে অবশ্য এই দাবি সম্পর্কে সন্দেহ হওয়ার কথা নয়।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মস্তিষ্কের ডান এবং বাঁ অংশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ডান-হাতিদের থেকে বাঁ-হাতিদের বেশি, এর ফলেই তারা বেশি বুদ্ধিমান হন। এমনকি বাঁ-হাতিদের জলের তলায় দৃষ্টিশক্তি ডান-হাতিদের থেকে বেশি। খুঁজলে এমন অনেক খুঁটিনাটি বিষয় সামনে আসবে। তবে সে সব সরিয়ে রাখলেও বাঁ-হাতি দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য এই বার্তা দেওয়া। তারা কোনো ভাবেই অস্বাভাবিক নন, ডানহাতিদের মতোই স্বাভাবিক।