রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ , ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ২৮ জুন ২০২৪

দীর্ঘদিনের মানসিক ক্লান্তি থেকে বাঁচার উপায়

দীর্ঘদিনের মানসিক ক্লান্তি থেকে বাঁচার উপায়

মানসিক চাপ আমাদের সবাইকেই কমবেশি ভুগিয়ে থাকে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক হুমকি, চাকরি-বাকরি, ব্যস্ততা, অসুখ-বিসুখ সবকিছু মিলিয়ে এই মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্য ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

কর্পোরেট সেক্টরসহ বহু বেসরকারি জায়গাতেই কাজের চাপে নাভিঃশ্বাস উঠছে। পুরুষ হোন বা নারী, কাজের চাপ সামলে ওঠার পাশাপাশি রয়েছে ঘর সামলানোর দায়। তার উপর থাকছে নানা চিন্তাভাবনা। দিনের পর দিন কার্যত একই রকম ভাবে চাপে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে শরীর ও মন। যার ফল মানসিক ক্লান্তি। দৈনন্দিন জীবন তো বদলে দেওয়া যাবে না, তবে মানসিক ক্লান্তি মুক্তির উপায় খুঁজে নিতে হবে। তার আগে জানা দরকার কেন মানসিক ক্লান্তি আসে?

মানসিক ক্লান্তির কারণ কী?

১. কর্মক্ষেত্রে লক্ষ্যপূরণের চাপ
২. কাজের পরও পরিবারের দায়দায়িত্ব
৩. ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা
৪. দীর্ঘ সময় ছুটি উপভোগ করতে না পারা
৫. বিশ্রাম ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ
৬. কাজ নিয়ে অতৃপ্তি, চাহিদামতো বেতন না মেলা

দিনের পর দিন চাপ নিয়ে জীবনে চলতে চলতে একটা সময় মানুষ মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করে শরীরেও। ক্রমাগত মন খারাপ থেকে কোনো কোনো সময় অবসাদও তৈরি হতে পারে। মানসিক চিন্তা ভাবনার জেরে হজমে সমস্যা, মাথা ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, ওজন আচমকা কমে বা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন অসুস্থ বোধ করার মতো লক্ষণ দেখা যায়। আচরণেও এর প্রভাব পড়ে। কারো সঙ্গে কথা বলতে ভালো না লাগা, পছন্দের কাজ করতেও ইচ্ছে না করা, নেশায় ডুবে গিয়ে ক্লান্তি থেকে মুক্তির উপায় খোঁজা।

মুক্তির উপায়?

ছুটি: মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তির প্রথম উপায় ছুটি। সেটা যদি লম্বা ছুটি না–ও হয় অন্তত একটা দিনের ছুটি, সেদিন কাজ দূরের কথা, কাজের কথা ভাবলেও চলবে না। সমস্যা বেশি মনে হলে, দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আসা দরকার। মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তির এর চেয়ে ভালো উপায় হয় না।

অতিরিক্ত চাপ কমানো: কেন কাজে অতিরিক্ত চাপ হচ্ছে, সেটি বুঝে চাপ কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। প্রয়োজনে কোন সময় কী ভাবে কাজ করলে সুবিধা হতে পারে, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে টানা কাজ না করে মাঝেমধ্যে একটু বিশ্রাম নেওয়ার।

মনকে শান্ত করা: খুব ক্লান্ত লাগলে মিনিট দশেক সময় নিয়ে টানটান হয়ে বসে গভীর ভাবে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। এই প্রক্রিয়ায় মন একটু শান্ত হবে। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল করতে দিনে নিয়ম করে কিছুক্ষণ প্রাণায়াম করুন। মাস খানেক প্রাণায়াম অভ্যাস করলেও মনের বদল সামান্য হলেও টের পাওয়া যাবে।

বডি মাসাজ: শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করতে মাসাজ খুবই কার্যকর। পুরো শরীর, মাথা বা পায়ে মাসাজ করালে স্নায়ু ও মাংসপেশি ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায়। এতে আরামবোধ হয়। ভাল লাগে।

ঘুম: অত্যধিক চাপ থাকলে ঘুমের সমস্যা হয়। পাশাপাশি প্রচুর কাজের চাপে যথাযথ ঘুমের সুযোগ মেলে না। আট থেকে ন’ঘণ্টার টানা একটা ঘুম খুব জরুরি। ভালো করে ঘুম মানসিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

নিজেকে সময় দেওয়া: একজন মানুষের কাজের বাইরে নিজের জন্য সময় দরকার হয়। ভালো থাকার জন্য মনকেও গুরুত্ব দিতে হয়। কিছুটা সময় নিজের জন্য বার করতে হবে। নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করুন। ভালো গান শোনা, বাইরে খেতে যাওয়া, পছন্দের সিনেমা দেখা, খেলা দেখা।

বাইরে গিয়ে শরীরচর্চা: যদি সম্ভব হয় খোলা জায়গায় হাঁটুন। হালকা ব্যায়াম করুন। সকালে হাঁটতে না পারলে বিকেলে মিনিট ১৫ সময় বার করে নিয়ে অফিসের ক্যাম্পাসে বা রাস্তাঘাটেই হেঁটে নিন। খোলা হাওয়ায় বেরোলে মন ভালো হবে। ক্লান্তি দূর হলে কাজ করতেও সুবিধা হবে।

জনপ্রিয়