গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে উপকারী বরুণ গাছ
বরুণ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম- Crateva religiosa। বরুণ Crateva গণের একটি ফুল গাছের নাম। এটি Capparaceae পরিবারের একটি ফুল। অন্যান্য নাম- প্বৈন্যা, শ্বেতপুষ্প, কুমারক, সাধুবৃক্ষ, শ্বেতদ্রুম, মহাকপিথা, মারুতাপহ, Spider Tree, Temple Plant, Garlic Pear। প্রচলিত ভাষায় বৈন্যা।
সাধারণত একটু নীচু জায়গায় জন্মে বা বলা যেতে পারে জলাভূমিপ্রিয় একটি গাছ হলো বরুণ। বসন্তকালে সাদা ও হালকা হলুদ ফুলে গাছ ভর্তি থাকে। পাতা বড় একটা দেখা যায় না তখন। দূর থেকে দেখতে অনেকটা আমেরিকার Dog wood-এর মত। ফুলের সে রকম কোনো গন্ধ নেই। বসন্তকালে পুষ্পাবৃত গাছ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।
বরুণ ফুলের ব্যবহার
ভাটি অঞ্চলে ধান কাটার সময় টেঁপী বোরোর গরম গরম ভাতের সঙ্গে বরুণের কচি ডগা ভর্তা-ভাজি করে গৃহস্থ নারীরা কামলাদের খেতে দেন। চৈত্রসংক্রান্তির দিনে হাওরের নারীরা সংগ্রহ করেন বরুণ ফুল। আসছে বছরটি যাতে পরিবার ও গ্রামসমাজের জন্য মঙ্গলময় হয়, সে জন্য বরুণের ফুল গ্রামময় গেঁথে দেওয়া হয় গোবরের দলায়। হাওরাঞ্চলে এ পর্ব আড়িবিষুসংক্রান্তি নামে পরিচিত।
বরুণ গাছের উপকারিতা
১. অতি প্রাচীন কাল থেকেই ভেষজ গাছ হিসেবে পরিচিত বরুণ। চরক ও সুশ্রুতে এর গুণগান করে অনেক কথা উল্লেখ করেছেন। এমনকি পাশ্চাত্যেও খ্রিষ্টপূর্ব এক শতাব্দীতে এক ভেষজ পণ্ডিত Crataeva এর ছাল নিয়ে অনেক পরীক্ষা করেছেন।
২. বাংলাদেশের মানুষ অতীতকালে ফল পাকাতে এই গাছের পাতা ব্যবহার করতেন। কিন্তু ফল পাকাতে ক্ষতিকারক ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই গাছের কদর নেই।
৩. বরুণের পাতা চর্ম রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৪. এছাড়াও ব্যথা, বাত নিরাময়ে বরুণের পাতা ব্যবহার করা হয়।
৫. শিকড়ের বাকলের নির্যাস গ্যাস্ট্রিক রোগে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা ফল রান্না করে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।