চোখের সুরক্ষায় কাজ করে সফেদা
সফেদা (Sapota) একটি পুষ্টিমান সমৃদ্ধ অত্যন্ত মিষ্টি, সুস্বাদু ও সুন্দর গন্ধযুক্ত একটি ফল। এটিকে প্রাকৃতিক পুষ্টির উৎস বলা হয়।
সফেদা গাছ বহুবর্ষজীবী, চিরসবুজ বৃক্ষ; এর আদি নিবাস মেক্সিকোর দক্ষিণাংশ, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চল। পেটেনেস ম্যানগ্রোভ ইকো-অঞ্চলের উপকূলীয় ইউকাতানে এই গাছ প্রাকৃতিকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। স্প্যানিশ উপনিবেশ আমলে এটি ফিলিপাইনে নেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও মেক্সিকোতে এর ব্যাপক উৎপাদন হয়।
সফেদার পুষ্টিগুণ:
প্রতি ১০০ গ্রাম সফেদা থেকে ৮৩ কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে ০.৭ গ্রাম প্রোটিন, ২১.৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১.১ গ্রাম ফ্যাট থাকে। আরো থাকে ০.০২ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১, ০.০৩ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-২ এবং ৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি। এছাড়াও এটি থেকে ০.৫ গ্রাম খনিজ, ২৮ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম ও ২ মি.গ্রা লৌহ পাওয়া যায়। এই ফলে ভিটামিন ‘এ’ ক্যারোটিন হিসেবে থাকে।
১০০ গ্রাম সফেদা থেকে ৯৭ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন পাওয়া যায়। প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে যা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি দেয়। রয়েছে ক্যালসিয়াম ও লৌহ। যা হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখে। ‘অ্যান্টিইনফ্লামাটরি’ উপাদান প্রদাহজনিত সমস্যা সমাধান করে।
উপকারিতা-
১. সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস যা হাড়ের গঠন মজবুত করে।
২. এটি কনজেশন এবং কাশি থেকে উপশম করতে সাহায্য করে।
৩. অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে সফেদায়। প্রদাহজনক সমস্যা সমাধানে সমাধান করে। অর্থাৎ গ্যাসট্রিটিস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
৪. সফেদায় বিদ্যমান ভিটামিন এ চোখের সুরক্ষায় কাজ করে। রাতকানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
৫. এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। সফেদা নিয়মিত খেলে স্থূলতা জনিত সমস্যার সমাধান হয়।
৬. সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ যা আমাদের শক্তি প্রদান করে।
৭. শুধু সফেদা ফল নয়। সফেদা গাছের পাতারও ঔষধি গুণ রয়েছে। সফেদা গাছের পাতা ছেঁচে সদ্য ক্ষত হওয়া স্থানে দিলে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ হয়।
৮. এটি ডায়রিয়া বিরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।
৯. এছাড়াও এই ফলের স্নায়ু শান্ত এবং মানসিক চাপ উপশম করার ক্ষমতা রয়েছে। ডাক্তাররা অনেকেই অনিদ্রা , উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিকে সফেদা ফল খেতে বলেন। এতে অনিদ্রা , উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।