রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

স্বাস্থ্য ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৩:১৩, ৭ আগস্ট ২০২৪

চিনিমুক্ত ২ সপ্তাহ জীবন যাপনে যেসব আশ্চর্য উপকার পাবেন

চিনিমুক্ত ২ সপ্তাহ জীবন যাপনে যেসব আশ্চর্য উপকার পাবেন

চিনিমুক্ত ২ সপ্তাহ বা ১৪ দিন জীবন যাপন করলে দারুণ সব উপকার আপনি পেতে পারেন। যা পুষ্টিবিদদের গবেষণায় উঠে এসেছে।

তো চলুন এবার, জেনে নিই কী সেসব উপকারিতা-

রোজকার জীবনের খাদ্যতালিকায় কোনো না কোনোভাবে চিনি থাকেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যালকোহল ও তামাকের মতো চিনিও আসক্তিকর। কারণ, চিনি সরাসরি রক্তে মিশে যায় এবং অতি উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ তৈরি করে নেশা সৃষ্টি করে। আর অতিরিক্ত চিনি খেলে মানবদেহে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে, এটা তো গবেষণায় প্রমাণিত।

তাই চিনির অন্য নাম ‘হোয়াইট পয়জন’ বা সাদা বিষ। এটা তো সবাই জানি, যে খাবারই আমরা খাই না কেন, তা চিনিতে পরিণত হয়। ফলে বেশি চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার খেলে খুব ক্লান্ত লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে, চিন্তাশক্তি কমে আসতে শুরু করে, শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে।

চিনিমুক্ত ২ সপ্তাহ জীবন যাপনে যেসব আশ্চর্য উপকার পাবেন

হজমের সমস‌্যা, নিদ্রাহীন রাত কাটানোর মতো সমস্যা দূর করতে পারে ১৪ দিন চিনিমুক্ত থাকতে পারলে। এ ছাড়া আরো বেশ কিছু আশ্চর্য উপকারিতাও আপনি পাবেন। ১৪ দিন চিনিমুক্ত থাকলে আপনার শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব খেয়াল করতে পারবেন ধাপে ধাপে। ধাপগুলো জেনে নেওয়া যাক—

১-৩য় দিন: প্রথম ৩টি দিন সবচেয়ে কঠিন। কারণ, প্রথমে আপনার শরীরকে চিনি না খাওয়াতে অভ্যস্ত করাতে হবে। কিন্তু কোনো ‘নেশাদ্রব্য’ হঠাৎ করে বন্ধ করলে শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ সময় মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। চিন্তার কিছুই নেই, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ সময় চিনির যে ক্ষতিকর উপাদান শরীরে জমা ছিল, শরীর তা নিষ্কাশনের কাজ শুরু করবে। তবে শরীরের অন্য সব প্রক্রিয়া চলতে থাকবে স্বাভাবিক নিয়মে।

৪-৭ম দিন: মনোযোগ ও শক্তি বৃদ্ধি হয় চতুর্থ দিন থেকে। এ সময় আপনি শারীরিক শক্তি ও মনোযোগ ফিরে পেতে শুরু করবেন। সপ্তম দিনে নিজেকে শক্তিশালী ভাবতে থাকবেন। আপনার মনোযোগ আগের চেয়ে বেড়ে যাবে।

৮-১০ম দিন: শরীর চিনিমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার পাচনতন্ত্র দারুণভাবে কাজ করতে শুরু করবে। এটা অষ্টম দিন থেকেই শুরু হবে। এ সময় অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য খুঁজে পেতে শুরু করে। পেট ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা কমতে শুরু করে।

১১-১৪তম দিন: ক্ষুধা কমে যাবে এবং ঘুম ভালো হবে দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে। এ সময় আপনার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করবে। চিনি শরীরের ঘুমচক্রে বিঘ্ন ঘটায়, তাই আপনার নিদ্রাহীনতা দূর হয়ে ভালো ঘুম হবে। এ সময় ক্ষুধা কমে গেলে আপনার বারবার খেতে ইচ্ছা করবে না বলে ওজনও কমে যাবে।

চিনিবিহীন থাকার দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা

১৪ দিনের চিনিমুক্ত জীবন শুরু করলে আপনি দীর্ঘমেয়াদি কিছু সুবিধাও পাবেন। যেমন হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমবে, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে, রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে স্থিতিশীল। শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যা দেখা দেয় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব নিয়ন্ত্রণে থাকবে ১৪ দিন চিনি না খেলে। ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো হবে খাদ‌্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার ফলে। ব্রণ ও একজিমা কমতে শুরু করবে। অকালবার্ধক্য ঠেকানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। মেজাজ ও স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি খেয়াল করবেন। এ ছাড়া বিষণ্নতা দূর করতেও এটি মোক্ষম দাওয়াই। কাজকর্মে মনোযোগ পাবেন বেশি।