রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ , ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৯ মে ২০২৪

বই পড়ার অনেক সুবিধা, তবে ১০ কারণ আপনার ধারণা বদলে দেবে

বই পড়ার অনেক সুবিধা, তবে ১০ কারণ আপনার ধারণা বদলে দেবে

‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে; কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা যদি তেমন বই হয়।’- কবি ও দার্শনিক ওমর খৈয়াম মানবজীবনে বইয়ের স্থানকে এভাবেই নির্ধারণ করেছেন। জীবনের সব বস্তুগত উপকরণ হারিয়ে গেলেও, সময়ের কালে ধুলোয় মলিন হলেও বই থাকে চির যৌবনে আসিন।

বই এমন একটি উপকরণ, যা একজন মানুষকে সহজেই আলোকিত করে তুলতে পারে। শিক্ষার আলো, নীতি-নৈতিকতা-আদর্শ, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সভ্যতা, সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ সবকিছুই রয়েছে বইয়ের ভেতরে।

নিয়মিত বই পড়ার অনেক উপকারিতা আছে। তাই এটি নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু, নিয়মিত বই পড়ার অনেক সুবিধা আছে। এখানে তেমন কয়েকটি সুবিধার কথা তুলে ধরা হলো। যেগুলো যে কাউকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারে।

মানসিক ব্যায়াম

মস্তিষ্ক সচল রাখতে মানসিক ব্যায়াম খুবই জরুরি। মানসিক ব্যায়াম না না করলে আমাদের চিন্তাশক্তি লোপ পেতে পারে। এর ফলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের ক্ষমতা নষ্ট হতে থাকবে। মানসিক ব্যায়ামের সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম হলো বই পড়া। তাই আপনার মস্তিষ্ক সচল রাখার জন্য নিয়মিত বই পড়া জরুরি।

মানসিক চাপ কমানো

দুশ্চিন্তা থেকে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিংবা পারিপার্শ্বিক কারণে মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে বই হাতে নিন। এই সকল চাপকে আপনি পাশে সরিয়ে রাখতে একটি ভালো বইয়ের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে ফেলুন। বই পড়ার মাধ্যমে আপনি মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

জ্ঞান বৃদ্ধি

বই পড়লে জ্ঞান বাড়বে - একথা বলাই বাহুল্য। আপনার জ্ঞানের ভাণ্ডার যত সমৃদ্ধ হবে, আপনার জীবনের বাধা বিপত্তি গুলো অতিক্রমে আপনি ততটাই শক্তিশালী হবেন। বই পড়লে নতুন তথ্য জানা যায়, যা আপনার ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগবে।

শব্দভান্ডার বৃদ্ধি

আপনি যত পড়বেন, তত নতুন নতুন শব্দ শিখবেন। আর এতেই আপনার শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হবে। পারস্পরিক কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ আমাদের শিক্ষাজীবন, ব্যক্তিজীবন বা কর্মজীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কর্মজীবনে ভালো যোগাযোগ দক্ষতার জন্য অনেকে বেশ সমাদৃত হন। এই দক্ষতা বৃদ্ধিতে আপনাকে সব থেকে সাহায্য করবে বই পড়া।

স্মৃতিশক্তির উন্নতি

তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তি আমরা কে না চাই! প্রায়ই আমরা বলে থাকি, স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে, অনেক কিছু মনে থাকে না। আবার ভালো স্মৃতিশক্তির মানুষকে আমরা শ্রদ্ধার চোখে দেখি। আপনি যখন একটি বই পড়েন, আপনাকে বইয়ের চরিত্র ও তাদের ভূমিকা, তাদের পটভূমি, তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, তাদের ইতিহাস, সূক্ষ্মতা স্মরণে রাখতে হয়। মজার ব্যাপার হলো, আপনি যখনই আপনার মস্তিষ্কে নতুন একটি স্মৃতি দেন, তা আপনার মস্তিষ্কে একটি নতুন পথ তৈরি করে। আগের স্মৃতিগুলোকেও শক্তিশালী করে তোলে।

চিন্তাশক্তি দক্ষতা শক্তিশালী

কর্ম বা ব্যক্তিজীবনে ‘জটিল চিন্তাশক্তি’ দক্ষতার কদর বেড়েই চলেছে। আমরা বই পড়ার সময় প্রায়ই জটিল কিছু ঘটনার কথা পড়ি, যেগুলো নিয়ে আমরা সচেতন বা অবচেতনভাবে চিন্তা করি। ঘটনাগুলোকে ধাপে ধাপে সাঁজাতে চেষ্টা করি, সমাধান করার চেষ্টা করি। অনেক পাঠক তো রীতিমতো কাগজ-কলম নিয়ে বসে যায় বইয়ে থাকা রহস্যের সমাধান করার জন্য। এছাড়াও বই নিয়ে আমরা অনেকের সঙ্গে আলাপ করি, আমাদের চিন্তা, লেখকের চিন্তা ব্যক্ত করার চেষ্টা করি। এসবই কিন্তু আমাদের চিন্তাশক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং এই দক্ষতাকে শক্তিশালী করে তোলে।

একাগ্রতা বৃদ্ধি

যখন আমরা বই পড়ি, তখন আমরা অন্যসব কিছু থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে পারি, একাগ্রভাবে গল্পের বা বইয়ের মধ্যে ডুবে যেতে পারি। যা আমাদের একাগ্রতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ব্যাপকভাবে। বর্তমান সময়ে রিলস্ আসার পর আমরা কোনো কিছুই বেশিক্ষণ দেখতে বা করতে চাই না। তাই একাগ্রতা বৃদ্ধি করতে বই পড়ার চেয়ে ভালো বিকল্প নেই।

ভালো লেখার দক্ষতা

পড়া এবং লেখা একে অপরের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। পড়ার মাধ্যমে আমাদের ভাষা ও শব্দের জ্ঞান বাড়ে আর এই জ্ঞান আমাদের লেখনীশক্তিকে বৃদ্ধি করে। এজন্যই বলে, লেখক হতে গেলে আগে অনেক বেশি পড়তে হবে, এরপর লিখতে হবে।

প্রশান্তি

বই পড়ার কারণে আমরা যে মানসিক প্রশান্তি পাই, সেটাই অনেক বড় ব্যাপার। বই পড়ার সময়ে আমরা হয়তো ডিজিটাল ডিভাইসের পিছনে সময় নষ্ট করতাম। সেটা না করে আমরা যে ভালো কিছু পড়েছি, কিছু শিখেছি, এই চিন্তা এই প্রশান্তির কি অমূল্য নয়?

বিনোদন

বই পড়ে উপরের সবগুলো উপকার তো আমরা পাচ্ছিই, পাশাপাশি এটা আমাদের একটা বিনোদনের মাধ্যম। বিনোদনের সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম। একটি ভালো গল্প, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের মনকে বিনোদিত করে আর এটা বিনোদনের সর্বোত্তম পথ। নির্মল ও শান্তিময় বিনোদন হলো - বই পড়া।

জনপ্রিয়