রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২৭ আগস্ট ২০২৪

বন্যা পরবর্তী সময়ে যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি

বন্যা পরবর্তী সময়ে যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি

প্রায় প্রতি বছরই বর্ষার মৌসুমে বন্যার সম্মুখীন হয় এ দেশের নিম্নাঞ্চলের মানুষ। তবে এ বছর ফেনী, নোয়াখালী,কুমিল্লা ও চট্টগ্রামসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। এ সময় ভোগান্তির যেন অন্ত থাকে না বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের। তবে শুধু বন্যার সময়ই নয়, বন্যা-পরবর্তী বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীনও হতে হয় তাদের। তাই তো এ সময় সচেতনতা অবলম্বন না করলে পড়তে হবে দুর্ভোগে।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রেললাইনও। এমনকি বেশ কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ আছে। অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ। এদিকে সেনাবাহিনী বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বন্যা পরবর্তী সময়ে যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি—

১. পরিচ্ছন্নতা: বন্যার সময় ঘরে বিভিন্ন দূষিত জায়গা থেকে পানি প্রবেশ করে। তাই বন্যা-পরবর্তী ঘর এবং আসবাবপত্র জীবাণুনাশক দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। অন্যথায় চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২. কৃমিনাশক ওষুধ সেবন: বন্যা-পরবর্তী ২ বছর কিংবা এর নিচের শিশু ছাড়া সব মানুষ এবং গবাদি পশুকে কৃমিনাশক ওষুধ খেতে হবে। বন্যার সময়ে খাদ্য এবং পানীয়তে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায় বিধায় এ সময়ে এই ওষুধ খাওয়া বাঞ্ছনীয়।

৩. বৈদ্যুতিক তার হতে সাবধান: বন্যা কিংবা প্লাবনের ফলে বৈদ্যুতিক খুঁটি হতে তার বিচ্ছিন্ন হয়ে ভূমিতে পড়ে থাকতে পারে। এছাড়া বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশের ফলেও ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগে ত্রুটি দেখা দিতে পারে। তাই দুর্যোগ-পরবর্তী এসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। অন্যথায় ঘটে যেতে পারে ভয়ংকর কোনো দুর্ঘটনা।

৪. সাপ ও অন্যান্য প্রাণী হতে সাবধান: বন্যা-পরবর্তী বসতবাড়ি কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপসহ বিভিন্ন প্রাণীর উপস্থিতি দেখা যেতে পারে। তাই এ সময়ে অবশ্যই এসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। প্রয়োজনে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

৫. বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার: প্লাবনের পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থাকে, যা নলকূপের পানির সঙ্গে মিশে পানি দূষণ ঘটায়। আর এ পানি আমাদের শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তাই বন্যা-পরবর্তী নলকূপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে বেশ কিছুক্ষণ নলকূপ চেপে পানি ফেলে দিতে হবে। এতে করে পরবর্তী সময়ে পানি পান করার উপযুক্ত হবে।

৬. মৃত প্রাণী মাটিতে পুঁতে ফেলুন: বন্যার পানিতে বিভিন্ন মৃত প্রাণীর মরদেহ বসতবাড়ির আশপাশে চলে আসতে পারে। তাই এ সময়ে এসব মৃত প্রাণী মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। অন্যথায় সেগুলো বায়ু কিংবা পানির মাধ্যমে শরীরের রোগ ছড়াতে পারে।

৭. ঘরে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করুন: বন্যা-পরবর্তী বসতবাড়িতে স্যাঁতসেঁতে ভাব দেখা যায়, যা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। তাই এ সময় ঘর আবদ্ধ অবস্থায় না রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করুন।

৮. চাষাবাদে সাবধানতা: চাষাবাদের ক্ষেত্রে কৃষকদের বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময় ধানক্ষেত কিংবা অন্যান্য জমিতে সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে জমিতে চাষাবাদের সময় হাঁটু পর্যন্ত শক্ত বুটজাতীয় জুতা পরা ভালো। এতে করে বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে অনেকটাই নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারবেন কৃষকরা।

৯. জরুরি সেবার নম্বর মনে রাখুন: বন্যা-পরবর্তী যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে অ্যাম্বুলেন্স, জেলা প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, জেলা কিংবা উপজেলা হাসপাতাল ইত্যাদির নম্বর মনে রাখুন কিংবা মোবাইল বা কাগজে সংরক্ষণ করুন।

১০. শাকসবজি ও ফলমূল ভালোভাবে ধুতে হবে: বন্যার সময় দূষিত পানিতে আবাদি জমি প্লাবিত হয়। এতে করে শাকসবজি কিংবা ফলমূলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ লেগে থাকতে পারে। তাই বন্যা-পরবর্তী অবশ্যই শাকসবজি এবং ফলমূল ভালোভাবে ধুয়ে তারপর খেতে হবে।