রাজস্থলীতে অস্ত্রের মুখে তিন শ্রমিককে অপহরণের অভিযোগ
রাঙঙামাটির রাজস্থলীতে রাতের আধারে সশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে অস্ত্রের মুখে তিন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১২ জুন) রাত সাড়ে আটটার সময় রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলাধীন ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের লংগদুপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অপহৃতরা হলেন- সোহাগ (২০), রূপক (১৮) ও বিশ্বজিৎ দে (২২)। অপহৃত তিনজনের মধ্যে সোহাগ ও রূপক এ দু’জন আপন ভাই। তবে কারা অপহরণ করেছে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি।
সংশ্লিষ্ট ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মোঃ এমদাদুল হক মিলন ও অপহরণের শিকারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মধ্যরাতে প্রতিবেদককে মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অপহৃত তিনজনই সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে বেসরকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনডিই’র বাস্তবায়নাধীন সড়ক ধারক দেয়াল নির্মাণ কাজের শ্রমিক ছিলেন।
অপরদিকে সোহাগ-রূপকের বড় ভাই সবুজ জানিয়েছেন, বিগত তিনমাস ধরেই তারা সর্বমোট ১৪ জন শ্রমিক রাজস্থলী-বাঙ্গালহালিয়া সড়কের লংগদু পাড়াস্থ লেবার শেড এ অবস্থান করে পাশের সড়কে এনডিই কর্তৃক ধারক দেয়াল নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার সন্ধ্যায়ও কাজ শেষ করে লংগদু পাড়াস্থ লেবার শেড এ অবস্থান করছিলো উক্ত তিন শ্রমিক। এ সময় অন্যান্য বাকি শ্রমিকরা একটু অদূরে চায়ের দোকানে গিয়েছিলো চা-নাস্তা করার জন্য। এ সময় ৫/৬ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী খুঁটি থেকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে লেবার শেডে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে তিনজনকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানের দিকে চলে যায়।
সবুজ জানান, আমার ভাইদের নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের লেবার শেডের পাশেই আরো একটি লেবার শেডে অবস্থান করা আরো দুইজন শ্রমিককে ধাওয়া করে সন্ত্রাসীরা। তারা দৌড়ে বাজারে এসে আমাদেরকে ঘটনাটি জানায়। আমি আমার ভাইকে মোবাইলে কল দিলে প্রথমবার সে রিসিভ করে কিছু না বলে সংযোগ চালু রাখলে আমি নিজেও অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের কন্ঠ শুনতে পেয়েছি।
তারা আমার ভাইকে বলছে, তোমাদের অন্য শ্রমিকরা কোথায় গেছে? সকলেই দোকানে গেছে এমনটি জানানোর পর অপহরণকারীরা আমার ভাইকে বলে তাহলে তোমরা আমাদের সাথে চলো। এরপর থেকে আমি বেশ কয়েকবার আমার ভাইয়ের মোবাইলে কল দিলে রিং হলেও কেউই রিসিভ করছে না। এক পর্যায়ে ভাইয়ের মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানিয়েছে সবুজ।
সবুজ জানিয়েছে, তারা তিন ভাই এক সাথেই উক্ত কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তারা নেত্রকোনা জেলাধীন পূর্বধলা থানার সাতকাঠি গ্রামের জামাল উদ্দিনের সন্তান। এছাড়া অপহৃত অপরজন বিশ্বজিৎ দে’র বাড়ি গাইবান্ধা জেলাধীন সাগাটা থানার ২নং ধলধলিয়া গ্রামে।
এ ব্যাপারে রাজস্থলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শামসুদ্দিন জানান, অপহণের ঘটনার খবর তারা শুনেছেন। তবে অপহৃতদের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ থানায় দায়ের করেনি। অভিযোগ দায়ের করা হলে আমরা আইনী প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।