রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ , ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

রাঙামাটি (সদর) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২৬ মে ২০২৪

দেশে স্ত্রীর পরকীয়া, প্রবাসে স্বামীর আত্মহত্যা

দেশে স্ত্রীর পরকীয়া, প্রবাসে স্বামীর আত্মহত্যা

পরিবার পরিজন ছেড়ে গতবছর বিদেশের মাটিতে পারি জমিয়েছিলেন রাঙামাটির লংগদু উপজেলার দিন মজুর আবদুল জলিলের ছেলে ফরহাদ হোসেন। দালালের মাধ্যমে বিদেশে গিয়েছিলো সে। বিদেশে গিয়ে জানতে পারেন তার স্ত্রী পরকীয় লিপ্ত হয়েছে। একদিকে দালালের চাপ অন্যদিকে স্ত্রীর অপকর্মের কথা সহ্য করতে না পেরে গত ২১ মে মঙ্গলবার বিদেশে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফরহাদ।

জানা যায়, ফরহাদ বিদেশে যাওয়ার পর স্ত্রী সুমি চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। সেখানে আরিফ নামে এক ছেলের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সুমি পরিবারের কাছে জানায় ফরহাদের পরিবার। কিন্তু কোনো প্রতিকার পায়নি তারা। 

স্ত্রীর বিভিন্ন অপকর্মের ভিডিও ছবি নানাভাবে ফরহাদের কাছে পৌঁছালে এই নিয়ে প্রতিনিয়ত দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি সহ মোবাইলে ঝগড়া হতো। একদিকে স্ত্রীর পরকীয়া অন্যদিকে দালাল চক্রের চাপে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়  এমনটাই দাবি ফরহাদের মা-বাবার।

ফরহাদের স্ত্রী সুমি আক্তার জানায় মৃত্যুর আগের দিন রাতেও আমার স্বামী আমাকে ফোন করে এবং সাথে অন্য একটি মেয়েকে লাইনে রেখে আমার সাথে কথা বলে। এসময় আমাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। একটা সময় আমার স্বামী অপরদিকের মেয়েটিকে বলে ফোন রেখে দিচ্ছি পরে কথা বলবো। এটা বলে ফোন কেটে দেয়।পরের দিন সকালে আমি গার্মেন্টসে চলে যাই। দুপুরে ব্রেকের সময় আমি বাসায় কল দিলে, শুনি আমার স্বামী ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। কেন মারা গেল কি হয়েছে কিছুই জানিনা। আরিফ নামে একটি ছেলের সাথে পরকীয়ার বিষয়ে সে জানায়, এরকম কিছুইনা। আমার ফুফাতো ভাই আরিফ আমার বাসায় আসা যাওয়া করতো। এই নিয়ে সবাই সমালোচনা করতো। এছাড়া তেমন কোন কিছু হয়নি।

ফরহাদের মা ফজর বানু বলেন, আমার ছেলেকে আমি বিদেশে পাঠাতে চাইনি। আমার ছেলের বউয়ের বোন জামাই তৌহিদ আমার ছেলেকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। সৌদিতে নিয়ে আমার ছেলেকে মরুভূমিতে কাজ করতে দেয়। গত একটা বছর হলো ছেলে বিদেশে গেছে। তার মুখ থেকে শান্তির কথা কখনো শুনিনি৷ দালালের চাপ আর বউয়ের অবৈধ সম্পর্ক আমার ছেলের জীবনটাই শেষ করে দিলো। আমি তাদের বিচার দাবি করছি। আর আমরা গরীব মানুষ। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি।

বাবা আব্দুল জলিল বলেন, আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করছি। কিন্তু দালালের কারনে পারছিনা। আমার ছেলে বিদেশে যাওয়ার পর থেকে বউয়ের জ্বালা আর দালালের চাপে দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে সকলের সহযোগিতা চাই।

এবিষয়ে লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনর রশীদ বলেন,যেহেতু ঘটনাটি অন্য দেশে হয়েছে সেহেতু আমাদের এখানে কিছু করার নেই। তাছাড়া এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ ও আসেনি।
 

জনপ্রিয়