নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ চান পরিবহন শ্রমিকরা
রাঙামাটিতে অবরোধে কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের দুই কোটি টাকার ক্ষতি
রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে চলমান অবরোধের কারণে আটকা পড়েছে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কাঁচামাল। ব্যবসায়ীরা এসব মালামাল জেলার বাইরে পরিবহণ করতে পারছেন না। অবরোধের কারণে কোন প্রকার ট্রাক, মিনিট্রাক না ছাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হচ্ছে বলে তারা জানান।
শহরের ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে ইঞ্চিন চালিত বোটে করে আসা কলা, জাম্বুরা, পেঁপেসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বোটেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে ট্রাক, মিনি ট্রাক মালিক শ্রমিকরা সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি এবং হামলার শিকার শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল জানান, শুক্রবার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কাঁচামাল নিয়ে আসেন কৃষকরা। অবরোধের কারণে সেসব মালামাল জেলার বাইরে পরিহণ করা সম্ভব হয়নি। যার কারণে এসব পণ্য বোটেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে। এতে জেলায় প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার ট্রাক মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ট্রাক দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানান। কিন্তু রাতেই তারা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। এখন রোদে পুড়ে বোটেই মালগুলো নষ্ট হচ্ছে।
সরেজমিনে শহরের ট্রাক টার্মিনালে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনচালিত বোট বোঝাই করে কলা, জাম্বুরা, পেঁপেসহ বিভিন্ন কাঁচামাল নিয়ে এসেছেন কৃষকরা। ট্রাক বোঝাই করে শহরের বাইরে পাঠাতে না পারায় বোটের উপর অলস সময় পারছেন তারা। এসব মালামাল উঠানামার কাজ করা শ্রমিকরাও কেউ বোটের উপর, কেউ বা ঘাটে বসে সময় পার করছেন। তারা জানান, দুইদিন ধরে মালামাল উঠানামার কাজ করতে না পারায় বেতনও জুটেনি। পরিবারের ভরনপোষনেও বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
রাঙামাটি ট্রাক মিনিট্রাক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, বিগত সময়েও আন্দোলনের নামে আমাদের গাড়ি ভাঙচুরসহ চালকদের মারধর করা হয়েছে। শুক্রবারের সহিংসতায় ৭টি ট্রাক, ৩টি মিনি ট্রাক ভাঙচুর হয়েছে। এছাড়াও ৬/৭জন শ্রমিক হামলার শিকার হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন এসব হামলায় আমরা এর কোনো প্রতিকার পায়নি। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তিনি।
রাঙামাটি সিএনজি অটোরিক্সা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু জানান, শুক্রবারের সহিংসতায় ৫টি সিএনজি অটোরিক্সা ভাঙচুর করা হয়েছে। ৮ জন চালক হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানান তিনি। সিএনজি ভাঙচুর ও চালকদের উপর হামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূর দাবি করেন তিনি।
রাঙামাটি ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান জানান, প্রশাসন নিরাপত্তা দিলে কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের যে কয়টি গাড়ি লাগে তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী রাঙামাটি সদর সেনা জোন কমান্ডার আমাদের আশ্বস্থ করেছেন; তারা নিরাপত্তা দিবেন। তাঁর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা ট্রাক ভাড়া দিয়েছি। তিনি বলেন, গাড়ি ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আশা করি প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নিবেন।