রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ , ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বালু সংকট

কাপ্তাই পিডিবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা

কাপ্তাই পিডিবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা

কাপ্তাই উপজেলাধীন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র (পিডিবি) এলাকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি বালু সংকটের কারণে উন্নয়ন কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়ায় মসজিদের একাংশ কর্ণফুলী নদীতে ভাঙনের কবলে পড়েছে। ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি রাঙামাটি জেলা তথা চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ হিসেবে পরিচিত। এদিকে ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটির উন্নয়ন কর্মকান্ড দ্রুত শুরু করতে না পারলে যেকোন সময় ভাঙনেরর কবলে পড়ে বড় দুর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি মসজিদ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের নদী সংলগ্ন পশ্চিম পাশে মাটি ধসে মসজিদটি হুমকির মুখে রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক একটি ধারক দেওয়াল নির্মিত হলেও বালু ভরাট না করায় ধারক দেওয়ালটিও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙন প্রতিরোধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান 'রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং' মসজিদের উন্নয়ন সহ ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করার অনুমতি পায়। কিন্তু বালি সংকটের কারণে ভাঙন প্রতিরোধ ও উন্নয়ন কাজটি আটকে রয়েছে।

এ ব্যাপারে উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার মোঃ শহীদ জানান, পূর্বে কাপ্তাইয়ের পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বালু সংগ্রহ করা হত স্বল্প মূল্যে। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই উপজেলা থেকে বালু সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় বালু সংকটের কারণে এই ফার্মের আওতাধীন পিডিবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উন্নয়ন ও ভাঙন প্রতিরোধ কাজসহ আরও কয়েকটি উন্নয়নমুলক কাজ থমকে আছে।

তিনি বলেন, বালু সংকট মোকাবেলায় কাপ্তাই অঞ্চলের কর্ণফুলী নদীর খালের মুখ, শীলছড়ি বালুরচর সহ কয়েকটি পয়েন্টে বিশাল বালুর উৎস রয়েছে। যদি এসব পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি পাওয়া যায় তবে উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজে বালু সংকট দুর হবে বলে ওই ঠিকাদার মন্তব্য করেন।

উক্ত মসজিদ কমিটির সদস্য ও পিডিবির কর্মচারী মোঃ হাফিজুর রহমান এবং মশিউর রহমান সোহেন বলেন, কিছুদিন পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কয়েকজন প্রকৌশলী ভাঙন এলাকাটি পরিদর্শন করেন এবং ওই এলাকার কর্ণফুলী নদীর খালের মুখ থেকে বালু উত্তোলন করে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করার পরামর্শ দেয়।

তারা বলেন, বর্তমানে বালু সংকটকে কেন্দ্র করে বালুর দাম অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও বিভিন্ন সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছে। আবার  মসজিদ ফান্ডেও আর্থিক সংকটের কারণে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছেনা। যার ফলে মসজিদের উন্নয়নমুলক কাজ থমকে আছে।

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েকবছর পূর্বে কাপ্তাই ৭.৪ মেগাওয়াট সম্পন্ন সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাকালে বালু সংগ্রহের উৎস হিসেবে কর্ণফুলী নদীর কাপ্তাই খাল মুখের বালি ব্যবহার করা হয়েছিল।

সূত্র জানায়, এসব বালি উজান থেকে আসা পানি ও পাহাড়ী ঢলের সাথে কর্ণফুলী নদীর কাপ্তাই খাল মুখ ও শীলছড়ির বালু চরে জমাট বাধে। এতে নদীতে মাছের বংশবিস্তারে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং কর্ণফুলী নদীতে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট।

এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন জানান, বালু মহল ছাড়া বালু উত্তোলন করা নিষেধ। পার্শ্ববর্তী উপজেলায় বালু মহল থাকলে সংশ্লিষ্টদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া কাপ্তাইয়ে কোন বালু মহল নেই, তবে পরিবেশ, প্রতিবেশের কোন প্রকার ক্ষতি বিহীনভাবে বালু উত্তোলনের সুযোগ থাকলে সে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হবে।

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়