তারেকের ভুলে বিএনপি নেতাকর্মীরা আবার বিপদে
তারেক জিয়ার একের পর এক ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে বিএনপিকে। দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি এখন নতুন করে সংকটে পড়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী এখন ঘর ছাড়া। এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গত ১৭ জুলাই থেকে সংগঠিত নাশকতা, তাণ্ডব এবং অরাজক পরিস্থিতির কারণে। এই সহিংসতার সঙ্গে বিএনপির প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর একারণেই বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার কররা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভীসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। গা ঢাকা দিয়েছেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ আরও কিছু নেতা। আবার বিএনপি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। খবর বাংলা ইনসাইডর
উল্লেখ্য, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া পরামর্শ দিয়েছিলেন বিএনপিকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে এবং যেকোন মূল্যে সরকার পতন ঘটাতে হবে। তারেক জিয়ার এই নির্দেশের সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও অনেক নেতা মাঠে নামে। বিশেষ করে বিএনপির কর্মীরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দন্ডিত এই ব্যক্তির কথায় উদ্বেলিত হয়ে জামায়াত শিবিরের সহযোগী হয়ে রাস্তায় নামে এবং পুলিশের সাথে সহিংসতায় লিপ্ত হয় এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নি সংযোগের সাথে জড়িয়ে যায়। আর একারণেই সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার পর এখন এসমস্ত ঘটনার সাথে যারা যুক্ত তাদেরকে আইনের আওতায় আনছে এবং এদের অনেককেই গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার অভিযান এখনো চলছে এবং সামনের দিনগুলোতে আরও অনেককেই গ্রেপ্তার করা হবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। এর ফলে বিএনপি নতুন করে সংকটে পড়েছে।
এর আগে গত বছর বিএনপি এক দফা আন্দোলন শুরু করে। এই এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছিল। এসব সমাবেশ বিএনপিকে অনেক উজ্জীবিত করছিল এবং সরকারের পক্ষ থেকেও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কোন বাঁধা না দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অন্ধকারে রেখে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া কর্মীদের সহিংসতায় উস্কে দেন এবং বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। তারেকের নির্দেশনা অনুযায়ী, তারেকের বিশেষ বাহিনী প্রধান বিচারপতির বাসভবন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়, অগ্নি সংযোগ করে। সরকার পরিস্থিতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সংযমের পরিচয় দেয়। যার প্রেক্ষিতে সেই সময় বিএনপির এই আগুন সন্ত্রাস এবং নাশকতা বেশিদূর ব্যাপ্তি লাভ করতে পারেনি।
কিন্তু এই ঘটনার পর পর বিএনপির ওপর খড়গ নেমে আসে এবং বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতাকে আইনের আওতায় আনা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় বহু কর্মীকে। সরকারের সামনে তখন কোন বিকল্প ছিল না। এই ঘটনায় বিএনপি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রতিরোধ করার ন্যূনতম সক্ষমতাটুকুও হারিয়ে ফেলে। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার পর বিএনপির মধ্যে হতাশা এবং ভীতি কাজ করে। নির্বাচনের পরও বিএনপির অনেক নেতা পালিয়ে ছিলেন, অনেকে জামিন নিয়ে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। দলের ভেতর হতাশা এবং এক ধরনের দুঃখবোধ কাজ করেছে। আর সেরকম পরিস্থিতিতে আবার তারেক জিয়ার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ রাস্তায় গিয়ে আরেকটি বিপদে পড়লো। এখন বিএনপি এমন পরিস্থিতি থেকে কিভাবে উদ্ধার পাবে তা নিয়ে বিএনপির অনেক নেতাই চিন্তিত। সকলে বলছেন তারেক জিয়ার ভুলে বিএনপি আবার বিপদে পড়লো।